বিশেষ প্রতিনিধি :- মাওলানা সাইফুদ্দিন মানিক
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে হঠাৎ চাপ বেড়ে গেছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) চট্টগ্রাম কার্যালয়ে। বিআরটিএর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. শহীদুল্লাহ আমাদের সময়কে বলেন, ‘অবৈধ গাড়ি না চালানোর জন্য সড়ক ও সেতুমন্ত্রী আগে থেকেই মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তার কাজের সঙ্গে যুক্ত হলো শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। স্বাভাবিকভাবেই মানুষ লাইসেন্স নবায়ন ও শিক্ষানবিশ লাইসেন্সের জন্য ভিড় করছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষানবিশ লাইসেন্স পেতেই বেশি ভিড় করছেন লোকজন। অন্য সময়ের চেয়ে প্রায় তিনগুণ আবেদন জমা পড়েছে। ফলে রাজস্ব বাড়ছে আগের তুলনায়।’ উপপরিচালক মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘মানুষ যদি সচেতন হয়, তা হলে সড়ক দুর্ঘটনা কমে আসবে। আগে আমাদের ফিটনেসের জন্য আবেদন জমা পড়ত গড়ে প্রতিদিন একশরও নিচে, এখন ৩২০টির মতো পড়ছে। সেবাপ্রার্থীরা এখন যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করছেন, সেটা যদি আগে থেকে করতেন, তা হলে আমাদেরও বাড়তি কাজের চাপ সামলাতে হতো না
নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নবায়নের জন্য চলছে দৌড়ঝাঁপ। এতে রাজস্ব আদায় বাড়ছে প্রতিদিন ২০ লাখ টাকারও বেশি। চাপে রয়েছেন কর্মকর্তারাও। ১ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত (আট কর্মদিবস) বিআরটিএ কার্যালয়ের নিজস্ব বুথে যানবাহনের ফিটনেস, ডকুমেন্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স বাবদ টাকা জমাতবে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ট্রাফিক পুলিশ আর বিআরটিএর কর্মকর্তারা যদি লাইসেন্সবিহীন গাড়ি ও চালকদের বিরুদ্ধে সব সময় কার্যকর পদক্ষেপ নিত, তা হলে এই চাপ সৃষ্টি হতো না। এখন প্রতিদিন আমরা যে চাপ সামাল দিচ্ছি, তার সিংহভাগও হতো না। এ ছাড়া দুর্ঘটনার পরিমাণও কমত।’
পড়েছে ৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। গড় হিসাবে সেটা ৮০ লাখেরও ওপরে। অন্য সময় রাজস্ব আদায় হতো গড়ে ৬০ লাখ টাকা।
গত সোমবার বিআরটিএ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে ফিটনেসসহ গাড়ির নতুন লাইসেন্স নিতে অন্যদিনের চেয়ে দ্বিগুণ গাড়ি দাঁড়িয়ে। এমনকি কার্যালয়ের সামনে যানজটও তৈরি হয়েছে। সেখানে কথা হয় শিক্ষানবিশ লাইসেন্সের জন্য আসা আহাছানুল ইসলাম রবির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘অনেক দিন ধরে ভাবছিলাম মূল লাইসেন্স নেব, কিন্তু ভোগান্তির কথা চিন্তা করে নেওয়া হয়নি।’ তা হলে এখন কেন নিতে এলেন এমন প্রশ্নে রবি বলেন, ‘সড়কে ঝামেলা এড়াতে।’
চট্টগ্রাম বিআরটিএর সহকারী পরিচালক ওসমান সরোওয়ার আলম বলেন, ‘১৯৯০ সাল থেকে (জেলা ও মেট্রো মিলে) দীর্ঘ ২৮ বছরে চট্টগ্রাম বিআরটিএ ২ লাখ ১৫ হাজার ২টি যানবাহনের নিবন্ধন দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি দেওয়া হয় মোটরসাইকেল, ৯৩ হাজার ৬৬৮টি। এদিকে গেল ১ আগস্ট থেকে ১৩ আগস্ট দুপুর ২টা পর্যন্ত মেট্রোতে ফিটনেস নবায়নের জন্য আবেদন পড়েছে ২ হাজার ১৩৯টি। আর জেলায় আবেদন করা হয়েছে ২৯৭টি। এ ছাড়া শিক্ষানবিশ লাইসেন্সের জন্য আবেদন পড়েছে মেট্রোতে ১ হাজার ৭৫০টি, আর জেলায় ১ হাজার ৫০টি।’
(সুত্র:-আমাদের সময় )