এই প্রথমবার টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে অন্য এক গ্যালাক্সির অজানা বস্তু, প্রবেশ করেছে আমাদের সৌরজগতে!

interstellar asteroid nasa


নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন ,এই প্রথমবারের মতো পৃথিবীর টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে অন্য এক গ্যালাক্সির অজানা বস্তু, যা প্রবেশ করেছে আমাদেরই সৌরজগতে! ১৯ অক্টোবর হেলিকাল হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্যান-স্টারস১’ টেলিস্কোপে  ধরা পড়ে সৌরজগৎ পরিভ্রমণকারী সেই অজানা ‘বস্তু’।বস্তুটির ব্যাস ৪০০ মিটার এবং এটি খুব দ্রুত গতি বেগে ছুটে চলছে।
এই অজানা ‘বস্তুটি’ প্রথম আবিষ্কার করেন,হনলুলুর হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী রব ওয়েরিক।অস্থায়ীভাবে এটার নাম রাখা হয়েছে ‘এ/২০১৭/ইউ১’।বস্তুটি  ২৫.৫ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ডে ছুটে চলছে। এর প্রচণ্ড গতি দেখে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এটা ধূমকেতু বা কোনো গ্রহাণু নয়।নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির ট্রাজেক্টরি বিশেষজ্ঞ ডেভিড ফারনোচ্চিয়া বলেন, ‘আমি যত কক্ষপথ পরিভ্রমণকারী দেখেছি, তার মধ্যে এটাই চরম’।নাসার পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা
হয়েছে, ‘এটার গতি ভীষণ, যে কারণে আমরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি, এটা আমাদের সৌরজগৎ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে এবং ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই।’
জেএলএল এর সেন্টার ফর নিক-আর্থ অজাজা স্টাডিজ ম্যানেজার পল ক্লোদাস বলেন, “আমরা কয়েক দশক ধরে এই দিনের জন্য অপেক্ষা করছি।” “দীর্ঘদিন ধরে এই বস্তুগুলি বিদ্যমান- এ গ্রহাণু বা ধূমকেতুগুলি নক্ষত্রের মাঝে ঘুরছে এবং মাঝে মাঝে আমাদের সৌরশক্তির মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে- কিন্তু এটি প্রথম এই ধরনের সনাক্তকরণ। এতদূর, সবকিছুই ইঙ্গিত দেয় যে এটি একটি ইন্টারস্টেলার অবজেক্ট, তবে আরো তথ্য এটি নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।


সাবমেরিন কিভাবে কাজ করে?


Submarine bangla


আপনার কি কখনো জানতে ইচ্ছে হয়েছে সাবমেরিন কিভাবে কাজ করে? অনেকের মনেই প্রশ্ন আছে সাবমেরিন কিভাবে চলে এবং কিভাবে পানিতে ভাসে ও আবার পানির নিচে চলে যায়। বিষয়টি তেমন জটিল কিছু না সাবমেরিন মূলত কাজ করে প্রাচীন গ্রীক বিজ্ঞানী আর্কিমিডিসের “ব্যালাস্ট ট্যাঙ্ক থিওরী” উপর ভিত্তি করে।এই থিওরীর উপর ভিওি করেই ১৬২০ সালে কর্ণেলিয়াস জ্যাকবসজুন ড্রেবেল নামীয় একজন ডাচ কর্তৃক প্রথম নৌযানবাহন হিসেবে সাবমেরিন আবিস্কার করেন।
ব্যালাস্ট ট্যাঙ্ক থিওরী হল কোন অদ্রব্য বস্তুকে পানিতে ডোবালে তা নিজের আয়তনের সমপরিমান পানি অপসারিত করবে। সোজা কথায় অপসারিত পানির ভরের থেকে পানিতে ডোবানো জিনিসটি যদি হালকা হয় তবে তা ভেসে থাকতে পারে।বিষয়টাকে আরও সহজে ও ভেঙ্গে  বলছি যাতে আপনারা সহজে বুঝতে পারেন ।
একটি খালি প্লাস্টিকের বোতলে যদি বাতাস ভরা হয় তখন কিন্ত বোলতটি পানিতে ভেসে থাকবে। ঠিক যদি আবার বোতলটিতে নতুন করে পানি ভর্তি করে দেওয়া হয় তবে সকল বাতাস বের হয়ে যাবে বোতলটি ভারী হয়ে গিয়ে পানিতে ডুবে যাবে। আবার যদি অর্ধেক বাতাস বোতলে রাখা হয় তবে বোতলটি অর্ধনিমজ্জিত অবস্থায় ভেসে থাকবে সেইম সূত্র অবলম্বন করে সাবমেরিন পরিচালিত হয়।
একই সূত্র ফলো করে সাবমেরিনে কিছু ব্যালাস্ট ট্যাংকার থাকে এর ভিতরে পানি ও বাতাস ডুকানো হয় যন্ত্রের সাহায্যে। যখন সাবমেরিন ডুবানোর দরকার পরে তখন এইসব ব্যালাস্ট ট্যাংকারে পানি ডুকিয়ে দেওয়া হয় ফলে সাবমেরিনটি ভারী হয়ে পানিতে ডুবে যায়। আবার যখন ভাসানোর দরকার পরে তখন ব্যালাস্ট ট্যাংকারের পানি গুলি বের করে যন্ত্রের সাহায্যে দ্রুত বাতাস ডুকতে থাকে ফলে সাবমেরিন পানির উপরে ভেসে উঠে।
তবে এতে করে সাবমেরিনের ভিতরে চাপের কোন পরিবর্তন হয়না কারণ হল এতে উন্নত মানের ষ্টীল, টাইটেনিয়ামের মতন ধাতু ব্যাবহার করা হয়। এইসব ধাতুর কারণে শুধু সাবমেরিনের ভিতরে নয় এর বাইরেরও পানি প্রচণ্ড চাপ সহ্য করার মতন ক্ষমতা থাকে।
সাবমেরিনের ভিতরে অক্সিজেন সরবরাহ করার জন্য যন্ত্রের সাহায্য নিয়ে অক্সিজেন তৈরি করা হয়।
অনেকে প্রশ্ন করেন পানির কত নিচে পর্যন্ত যেতে পারে সাবমেরিন। আসলে সাবমেরিনের একটা নিদিষ্ট রেঞ্জ থাকে সেই রেঞ্জের  নিচে গেলে সাবমেরিনটির দুর্ঘটনায় ঘটবে । বর্তমানের আধুনিক সাবমেরিন গুলি মধ্যে সবচেয়ে বেশী চাপ নিতে সক্ষম মার্কিন পারমাণবিক সাবমেরিন ও রাশিয়ান সাবমেরিনগুলি, মার্কিন সাবমেরিন গুলি ৪৫০০ ফুটের নিচে যেতে পারে না। যদি যায় তবে পানির বিশাল চাপে সাবমেরিন চ্যাপ্টা বানিয়ে ফেলবে।
সাবমেরিন কতদিন পানির নিচে থাকবে তা নির্ভর করে মূলত কতদিনের জ্বালানি আছে ও ক্রদের খাদ্য কি পরিমাণ রিজার্ভ আছে। যদি ডিজেল সাবমেরিন হয় তবে ডিজেল নেভার জন্য কিছুদিন পরেই উপরে আসতে হয়। আর যদি পারমাণবিক সাবমেরিন হয় তবে একবার জ্বালানি নিয়ে এটি একটানা ২৫ বছর বা আরও বেশী সময় পানির নিচে থাকতে পারবে কিন্ত ক্রদের খাদ্যর জন্য তাকে উপরে আসতেই হবে।কারণ পারমাণবিক সাবমেরিন নিজে ২৫ বছর বা আরও বেশীদিন পানির নিচে থাকতে পারবে কিন্ত ভিতরের মানুষের জন্য ৬ মাস পরে উপরে আসতেই হবে। সাবমেরিনে ৬ মাসের বেশী খাবার মজুদ রাখা যায় না।
আশা করি সাবমেরিন নিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর পাবেন।
Share this:


ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর:মহাকাশের মহাবিস্ময় পর্ব:১





ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে জানে না এরকম মানুষের সংখ্যা বর্তমানে খুব কম। বর্তমান সময়ে মহাকাশ গবেষণার অন্যতম আলোচিত বিষয় হলো ব্ল্যাকহোল। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। রোজই পত্রিকার পাতা উল্টালে বা ইন্টারনেটে এ সম্পর্কে খবর পড়ে থাকি। বেশ কিছু হলিউড ফিল্মেও ব্ল্যাকহোল দেখানো হয়েছে। সত্যি বলতে,ব্ল্যাকহোল সম্পর্কে আমরা আজ পর্যন্ত খুব কমই জানতে পেরেছি। তো শুরু করার আগে এর সংঙাটা একবার জেনে নেই- ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর হলো বিশাল পরিমাণ ভরবিশিষ্ঠ কোনো বস্তু যার মহাকর্ষ বল অনেক বেশি হওয়ায় কোনো বস্তুই এর মহাকর্ষ বলয় ভেদ করে বের হতে পারেনা। এমনকি আলো পর্যন্তও এর ভেতর থেকে বের হতে পারে না।আমরা জানি যে কোনো বস্তুকে অন্য আরেকটি বস্তুর মহাকর্ষ বলয় ভেদ করতে হলে তার নির্দিষ্ট পরিমাণ মুক্তিবেগ দরকার। অর্থাত্ এই নির্দিষ্ট পরিমাণ বেগে বস্তুটি উপরের দিকে যাত্রা শুরু করলে সেটি অন্য বস্তুর মহাকর্ষ অতিক্রম করতে পারবে। যেমন পৃথিবীর মুক্তিবেগ হলো সেকেন্ড প্রায় ১১ কিলোমিটারের মতো। কোনো বস্তু যদি এই পরিমাণ বা এর চেয়ে বেশি বেগে পৃথিবীর বিপরীতে যাত্রা করে তবে তা আর পৃথিবীতে ফিরে আসবেনা। এই কৌশলটা কাজে লাগিয়েই কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে স্থাপন করা হয়। আলোর বেগ হলো সেকেন্ডে প্রায় তিন লক্ষ কিলোমিটার!! অর্থাত্ অতি সহজেই এটি পৃথিবীর মহাকর্ষ অতিক্রম করতে পারবে। কিন্তু যদি এমন হয় যে কোনো বস্তুর মুক্তিবেগ এর চাইতেও বেশি?? নিশ্চয়ই আলোও এর থেকে বের হতে পারবে না!!! এই বস্তুটাই কৃষ্ণগহ্বর। যার থেকে আলো পর্যন্তও বের হয় না। এজন্যই মুলত ব্ল্যাকহোলের ভেতরটা সম্পুর্ন কালো দেখা যায়। এজন্যই এর নাম দেয়া হয়েছে “কালো গহ্বর”।



ইংরেজিতে BlackHole. যেহেতু বিশাল পরিমাণ মহাকর্ষের কারনে এর সৃষ্টি হয় তাই এর সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের আগে “মহাকর্ষ” জিনিসটা আসলে কি? তা আগে জানতে হবে।যদিও আমরা সবাই জানি যে মহাকর্ষ এক ধরনের বল যা প্রত্যেকটা বস্তুর মধ্যেই বিদ্যমান। কিন্তু এটা হলো নিউটনের ধারনা।সত্য হলো এই ধারনাটা আসলে আংশিক সঠিক,অর্থাত্ এই ধারনার মধ্যে সামান্য ভুল রয়েছে। এর ভুলটা ধরার জন্য আমাদের নিউটনকে ছেড়ে আইনস্টাইনের ধারনায় যেতে হবে। ভুলটা হলো মহাকর্ষ আসলে কোনো বল না। এটি হলো আমাদের চারপাশের স্থান কালের সংকোচনের ফলে সৃষ্ট একটি গর্তের মতো। স্থান কালের সংকোচনের কারনে বস্তুর চারপাশে ঢালু জায়গা সৃষ্টি হয় যার কারনে আশেপাশের বস্তুসমুহ ওই বস্তুটার দিকে ধাবিত হয়।নিচের চিত্র দেখলে ব্যাপারটা অনেকটা পরিস্কার হয়ে যাবে-
এই ধারনার প্রবর্তক হলেন মহান বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন। তিনি আমাদের চারপাশের স্থানকে একটি চাদরের সাথে তুলনা করেছেন এবং বলেছেন ভরসম্পন্ন বস্তু এই স্থান-কালের মধ্যে বিকৃতি ঘটায় এবং এটাকে খানিকটা নিচের দিকে সংকুচিত করে ফেলে। যেই বস্তুর ভর বেশি সেটা বেশি সংকোচন ঘটায় এবং চারপাশের বস্তুসমুহ এর দিকে বেশি আকর্ষণ অনুভব করে যেহেতু সংকোচন যত বেশি ঢালুর পরিমাণও তত বেশি। এই স্থান-কালকে(Space Time) আইনস্টাইন বস্তুর চতুর্থ মাত্রা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। যেখানে স্থান এবং সময় জড়িয়ে এক হয়ে গেছে। বস্তুর অন্য তিনটি মাত্রা হলো দৈর্ঘ্য,প্রস্থ এবং উচ্চতা।সময় হলো বস্তুর পঞ্চম মাত্রা। সময় আসলে পরম কিছু নয়,এটিও আপেক্ষিক এরও বিকৃতি ঘটানো সম্ভব। এগুলোই ছিলো মুলত আইনস্টাইন এর আপেক্ষিক তত্তের মুল বিষয়-বস্তু। অর্থাত্ আমরা যদি কোনদিন পঞ্চম মাত্রায় যেতে পারি তবে আমরাও দৈর্ঘ্য,প্রস্থ উচ্চতার মতো সময়কেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো।ইচ্ছে করলেই ভবিষ্যতে চলে যেতে পারবো বা অতীতেও ফিরে যেতে পারবো। তো এতক্ষণে আমরা মহাকর্ষ এবং এর উৎপত্তি নিয়ে আইনস্টাইন এর ধারনাটা আলোচনা করছিলাম।কিন্তু এটাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে এর পক্ষে প্রমান দরকার। এইটা পরীক্ষা করে দেখা দরকার যে আসলেই বস্তুর ভর তার চারপাশের স্থান-কালকে বাকিয়ে দেয় কিনা? আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অফ রিলেটিভিটি তে ১৯১৫ সালে তিনি এই ধারনাটা প্রথম উপস্থাপন করেন। তখন খুব অল্পসংখ্যক মানুষ ছাড়া কেউ এই তত্ত্বকে স্বীকার করেনি।অর্থাত্ এটি প্রমাণ করার দরকার ছিল। কিন্তু বাহ্যিকভাবে আমরা এটাকে প্রমাণ করার কোনো উপায়ই দেখিনা। তাই এটিকে প্রমাণ করার জন্য এই স্থান কালের সংকোচন থেকেই একটি তত্ত্ব সামনে এলো,একে বলা হয় গ্যাভিটেশনাল লেন্সিং।আমরা জানি আলো সরলপথে চলে।আসলে আলো স্থান কালের মধ্যে দিয়েই সরল পথে চলে।এখন যদি এমন হয় যে আলোর চলার পথটিই বাঁকা হয়ে গেলো?তাহলে নিশ্চয়ই আলোও বাকা হয়ে যাবে?? আসলে সত্যিকারে তাই হয়। নিচের চিত্র খেয়াল করুন- চিত্র:গ্র্যাভিটেশনাল লেন্সিংচিত্র:গ্র্যাভিটেশনাল লেন্সিং চিত্রে আমাদের সৌরজগত, এবং সুর্যের পিছনে একটি অন্য নক্ষত্র দেখা যাচ্ছে। এখন নক্ষত্রটি যেহেতু সুর্যের ঠিক পিছনে,তাই আমাদের এটা দেখার কথা নয়?নক্ষত্রটা জলন্ত, অর্থাত্ এর আলো আমাদের দিকে আসছে,সরলপথে। কিন্তু মাঝখানে সুর্যের অতিরিক্ত ভরের কারনে স্থান-কাল বেঁকে গেছে।অর্থাত্ পিছনের নক্ষত্রটির আলো এইপর্যন্ত এসে এরপর বেঁকে যাওয়ার কথা।অর্থাত্ নক্ষত্রটি পৃথিবীর সোজাসুজি না হলেও আমরা এর আলো দেখা উচিত?? সত্যিকার অর্থে তাই হয়,কিন্তু সুর্যের অতিরিক্ত আলোর কারনে এই আলো আমরা দেখতে পাইনা। কিন্তু আপেক্ষিক তত্ত্ব প্রমান করার জন্য এটা জরুরি!আমাদের যেকোনো ভাবেই হোক,পিছনের নক্ষত্রটাকে দেখতেই হবে। ঠিক এটাই হয় ১৯১৯ সালে সুর্যগ্রহনের সময়। চাঁদ এবং সুর্য একই সরলরেখায় চলে আসার কারনে চাঁদের কারনে সুর্য আধারে ঢেকে যাওয়াকে সুর্যগ্রহন বলে। গ্রহনের মাঝামাঝি সময়ে যখন সুর্য চাঁদ দ্বারা সম্পুর্ন ঢেকে যায় তখন পৃথিবীতে আধার নেমে আসে,আর এই সময়টাই পিছনের নক্ষত্রটাকে দেখার উত্তম সময়!! ১৯১৯ সালে ব্রাজিলে এই ঘটনাটিই ঘটে। সুর্য ঢেকে যাওয়ার পর আংশিক আধারে দেখা মিলে কাঙ্ক্ষিত নক্ষত্রটি,প্রমান হয়ে যায় আইনস্টাইন এর আপেক্ষিক তত্ত্ব। মহাকর্ষকে মানুষ নতুন করে চিনতে শুরু করে। যেই মানুষটি এই পরীক্ষাটি সম্পন্ন করেছিলেন তার নাম হলো স্যার আর্থার এডিংটন।চিত্র:স্যার আর্থার এডিংটনচিত্র:স্যার আর্থার এডিংটনআপেক্ষিককতা প্রমাণ হওয়ার পর আইনস্টাইন রাতারাতি নায়ক বনে যান। বিভিন্ন জায়গা থেকে সংবর্ধনা পেয়ে থাকেন। এবার আমাদের আলোচনার বিষয়ে ফিরে আসি। ভরের আধিক্যের কারনে স্থান-কালের এরকম বেঁকে যাওয়ার জন্যই ব্ল্যাকহোলের সৃষ্টি। যেই নক্ষত্রগুলো পরবর্তীতে ব্ল্যাকহোল হতে পারে তাদের ভর এত বেশি হয় যে তারা স্থান-কালের মধ্যে অসীম পরিমাণ গর্ত সৃষ্টি করে এবং কোনো বস্তুই এর ভেতর থেকে বের হতে পারে না।এগুলো নিয়ে পরের পর্বে আলোচনা করবো তার আগে আমাদের নিজেদের সসীম মহাকর্ষ নিয়ে আলোচনা করেই পর্ব শেষ করছি। এতক্ষণে আমরা মহাকর্ষ সম্পর্কে জেনেছি,কোনো ভারি বস্তু যে তার আশে পাশের বস্তুসমুহকে কেন আকর্ষণ করে তা জেনেছি।এখন একটা উদাহরণ কল্পনা করা যাক-পৃথিবী কতৃক তার আশেপাশের স্থান কালের সংকোচনের কারনেই চাঁদ পৃথিবীর চার পাশে প্রদক্ষিন করতে থাকে এবং পৃথিবী থেকে দুরে ছিটকে যায় না। এখন প্রশ্ন হল চাঁদ তাহলে পৃথিবীতে পড়ে যায় না কেন?? এর উত্তরটা খুবই সহজ,তা হলো চাঁদ যখন পৃথিবীকে প্রদক্ষিন করতে থাকে তখন এর মধ্যে দুইটা বলের সৃষ্টি হয়। একটি কেন্দ্রমুখী বল(Centripital Force) আরেকটি কেন্দ্রবিমুখী বল(Cenrifugal Force) যা তাকে কেন্দ্রের থেকে দুরে ঠেলে দেয়। এই কেন্দ্রবিমুখী বলের কারনেই চাঁদ পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে না। এতক্ষণে নিশ্চয়ই কৃষ্ণগহ্বর সৃষ্টির কারটা বুঝে গেছেন? আজকে এপর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখছি। আগামী পর্বে কৃষ্ণগহ্বর সৃষ্টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবোPost Related Things: ব্ল্যাক হোল কি, ব্লাক হোল রহস্য, ব্লাক হোল কে আবিষ্কার করেন, ব্ল্যাক হোল তথ্য, কৃষ্ণগহ্বর কি, black hole, black hole কি, কৃষ্ণগহ্বর


বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট | Bangabandhu-1


বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট  Bangabandhu-1 সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যনির্মাতা প্রতিষ্ঠান: ৩.৭ টন ওজনের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটির ডিজাইন এবং তৈরি করেছে ফ্রান্সের কোম্পানি থ্যালাস অ্যালেনিয়া স্পেস। স্যাটেলাইটের কাঠামো তৈরি, উৎক্ষেপণ, ভূমি ও মহাকাশের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, ভূ-স্তরে দুটি স্টেশন পরিচালনার দায়িত্ব এ প্রতিষ্ঠানটির।
স্যাটেলাইটের ধরণ: মহাকাশে প্রায় ৫০টির উপর দেশের দুই হাজারের উপর স্যাটেলাইট বিদ্যমান। এগুলোর মধ্যে রয়েছে-আবহাওয়া স্যাটেলাইট, পর্যবেক্ষক স্যাটেলাইট, ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট ইত্যাদি। তবে বিএস-ওয়ান হল যোগাযোগ ও সম্প্রচার স্যাটেলাইট।
স্যাটেলাইটের কাজ: টিভি চ্যানেলগুলোর স্যাটেলাইট সেবা নিশ্চিত করাই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের প্রধান কাজ। এর সাহায্যে চালু করা যাবে ডিটিএইচ বা ডিরেক্ট টু হোম ডিশ সার্ভিস। এছাড়া যেসব জায়গায় অপটিক কেবল বা সাবমেরিন কেবল পৌছায় নি সেসব জায়গায় এ স্যাটেলাইটের সাহায্যে নিশ্চিত হতে পারে ইন্টারনেট সংযোগ।
অর্থায়ন: প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২৯০২ কোটি টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হচ্ছে ১৫৪৪ কোটি টাকা, বাকি ১৩৫৮ কোটি টাকা হংকং সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের (এইচএসবিসি) বিডার্স ফিনান্সিং এর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে।
উৎক্ষেপণকারী প্রতিষ্ঠান ও উৎক্ষেপণকারী রকেট: মার্কিন রকেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স এই স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরালে কেনেডি স্পেস সেন্টারে স্পেসএক্সের লঞ্চ প্যাড থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১  ‘ফ্যালকন ৯’ রকেটে করে উৎক্ষেপণ করা হয়।
স্যাটেলাইটের ফুটপ্রিন্ট: বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের অবস্থান ১১৯.১ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমার কক্ষপথে। এর ফুটপ্রিন্ট বা কভারেজ হবে ইন্দোনেশিয়া থেকে তাজিকিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত। শক্তিশালী কেইউ ও সি ব্যান্ডের মাধ্যমে এটি সবচেয়ে ভালো কাভার করবে পুরো বাংলাদেশ, সার্কভুক্ত দেশসমূহ, ফিলিপাইন এবং ইন্দোনেশিয়া।
মহাকাশে কেনা হয় কক্ষপথ: ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি অরবিটাল স্লটে (নিরক্ষরেখায়) উড়বে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে ১৫ বছরের জন্য অরবিটাল স্লট বা নিরক্ষরেখা (১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব) লিজ নিয়েছে বাংলাদেশ। দুই কোটি ৮০ লাখ ডলার ব্যয়ে এ স্লট বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে।
বিএস-ওয়ানের খরচ: প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২৯০২ কোটি টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হচ্ছে ১৫৪৪ কোটি টাকা, বাকি ১৩৫৮ কোটি টাকা হংকং সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের (এইচএসবিসি) বিডার্স ফিনান্সিং এর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে।
সুযোগ সুবিধা সমূহ
দেশীয় অর্থ সাশ্রয়:
বর্তমানে দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ভি-স্যাট ও ইত্যাদি সংস্থা বিদেশি স্যাটেলাইট ব্যবহার করছে। বহির্বিশ্বের বিভিন্ন স্যাটেলাইট অপারেটরের কাছ থেকে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপন্ডার ভাড়া বাবদ প্রতি বছর প্রায় ১৪ মিলিয়ন ইউএস ডলার ব্যয় করে থাকে। অনুমোদন পাওয়া আরও স্যাটেলাইট চ্যানেলের সম্প্রচার শুরু হলে এ ভাড়া আরও বাড়বে। শুধু ব্রডকাস্টিং চাহিদার পূরণে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হলে এ অর্থ দেশেই রাখা সম্ভব হবে। তখন এই অর্থ প্রতি বছর রাজস্ব হিসেবে আয় হবে।
বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন:
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ৪০টি ট্রান্সপন্ডার ক্যাপাসিটি থাকবে। এর মধ্যে ২০টি ট্রান্সপন্ডার বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে। বাকি ট্রান্সপন্ডার বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলে সম্প্রচার সেবার প্রসার সহজ হবে:
প্রত্যন্ত অঞ্চলে সম্প্রচার সেবার প্রসার সহজ এবং বৈশ্বিক টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে পরনির্ভরশীলতার অবসান হবে। এছাড়া দুর্যোগপ্রবণ বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট।

ব্রডকাস্টিং সেবায় খরচ কমবে:
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হলে বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া ছাড়াই প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেক কম মূল্যে ব্রডকাস্টিং সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। এ ছাড়া টেলিমেডিসিন, ই-লার্নিং, ই-গবেষণা, ভিডিও কনফারেন্স, প্রতিরক্ষা ও দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় জরুরি যোগাযোগের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট।
I BUILT MY SITE FOR FREE USING